ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার-এর ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্নে। এমনকি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার ব্যাংকগুলোর চেয়েও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মূলধন সংরক্ষণের হার কম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মূলধন সংরক্ষণে শীর্ষে রয়েছে ভারত। এরপর পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। সবার নিচে রয়েছে বাংলাদেশ। গত রোববার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন-২০২২ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ভারতের ব্যাংকগুলোর মূলধন রাখার হার ছিল ১৬ শতাংশ। পাকিস্তানের ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বৈশ্বিক মন্দার কারণে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মূলধন রাখার হার কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশের বেড়েছে। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মূলধন রাখার হার বাড়ছে। অন্যান্য দেশগুলোরও বাড়ছিল। কিন্তু তাদের ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কমে গেছে।
সূত্র জানায়, যে ব্যাংকের মূলধন যত বেশি থাকবে, ওই ব্যাংক আর্থিকভাবে তত শক্তিশালী। বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে কমপক্ষে ১০ শতাংশ মূলধন রাখতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ শতাংশের কম মূলধন ছিল ১১টি ব্যাংকের। ১০ শতাংশের বেশি থেকে সাড়ে ১২ শতাংশের কম মূলধন ছিল ৫টি ব্যাংকের। ২০ শতাংশের বেশি মূলধন রয়েছে মাত্র ১২টি ব্যাংকের। ব্যাংকিং খাতের বড় তিনজন ঋণ গ্রহীতা কোনো কারণে ঋণ খেলাপি হলে ২২টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়বে।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে আগে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। এখন শীর্ষে চলে এসেছে শ্রীলঙ্কা। তাদের মোট ঋণের ১১ শতাংশ খেলাপি। এরপরেই রয়েছে বাংলাদেশ। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৯ শতাংশ। সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণ নেপালের, ২ শতাংশের কম। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় খেলাপি ঋণের হার বাড়ছে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান।