এখন থেকে বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক পিএলসির মাধ্যমেও সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাসিক কিস্তির অর্থ জমা দেওয়া যাবে। দেশের অভ্যন্তরে থাকা নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যাংকটির ডিজিটাল লেনদেন পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রবাসীরাও কিস্তির টাকা জমা দিতে পারবেন। এ লক্ষ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও সিটি ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এ স্মারক স্বাক্ষর হয়। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান ও সিটি ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাসরুর আরেফিন সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রধান অতিথি ছিলেন। দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে সিটি ব্যাংক এ সেবাটি চালু করেছে।
এখন থেকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাসিক কিস্তি আদায়সহ দেশে ও বিদেশে এর যাবতীয় প্রচার-প্রচারণায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে সিটি ব্যাংক। পেনশন স্কিমের ওয়েবসাইটে সিটি ব্যাংকের ইন্টারনেট পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে অ্যামেক্স, ভিসা ও মাস্টারকার্ড দিয়ে পেনশন স্কিমের কিস্তি পরিশোধ করা যাবে। দেশে সিটিটাচ ও সিটি-লাইভ ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ এবং প্রবাস থেকে সিটি-রেমিট অ্যাপ ব্যবহার করেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন স্কিমের মাসিক কিস্তি ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমা দিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে সামাজিক সুরক্ষা খাতের সুবিধাভোগী ও সুবিধার পরিমাণ বাড়াতে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশনের সমতা, সুরক্ষা ও প্রগতি স্কিমে বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেলেও প্রবাসী স্কিম পিছিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যাংকের মাধ্যমে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স আসছে, তাদের বড় ভূমিকা পালন করার অবকাশ আছে। অর্থ সচিব জানান, পেনশন স্কিমের অর্থ সরকারের ট্রেজারি বন্ডের মতো সুরক্ষিত জায়গায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ১০ কোটি টাকার ট্রেজারি বন্ড কেনা হয়েছে। শিগগিরই আরো ১০ কোটি টাকার বন্ড কেনা হবে। তিনি বলেন, প্রবাসীদের পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তির হার বাড়াতে চারটি বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে প্রথম কোনো বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে সিটি ব্যাংক সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমে যুক্ত হলো।
সিটি ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, দেশের আর্থিক খাতের সম্প্রসারণ ও মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেনশন স্কিম বড় ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি এটি দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকের জন্যও সুরক্ষা হিসেবে কাজ করবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমরা শুধু ‘প্রমোটার’ হিসেবে ভূমিকা রাখতে চাই না। আমরা পেনশন স্কিম বিক্রি করতে চাই। পেনশন স্কিমে গ্রাহকদের অন্তর্ভুক্তি আরো বাড়াতে চাই।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেনশন ব্যবস্থা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। তারা এর সুফলও ভোগ করছে। বাংলাদেশে এর সুফল পেতে আরও অন্তত ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তখন এ ব্যবস্থা সবার কাছে আরও গ্রহণযোগ্য হবে, প্রক্রিয়াও অনেক সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের মালয়েশিয়া মানি ট্রান্সফারের (সিবিএল) প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান ফারাজী বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ৫০ হাজার প্রবাসী সিটি ব্যাংকের পরিষেবা ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু দেশটিতে প্রায় ১০ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। ফলে আরও বেশি প্রবাসীর কাছে পৌঁছানোর সুযোগ আছে। একই সঙ্গে প্রবাসীদের পেনশন স্কিমের বিষয়েও আগ্রহী করে তোলা সম্ভব হবে।