বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে প্রায় সব ধরনের সবজির। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে এখনও ভোক্তাদের জন্য বড় অস্বস্তি আলু ও পেঁয়াজের দর নিয়ে। অস্বস্তি রয়েছে চাল ও চিনির দর নিয়েও। আর মাত্র কয়েক দিন পর বাজারে নতুন ধান উঠবে। কিন্তু তার আগে মোটা ও মাঝারিমানের চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেটসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার এ তথ্য পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা গত ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত তিন মাস ধরেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের বেশি। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বেড়েছে চালের দাম
কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের হাটবাজারগুলোতে নতুন বোরো ধান উঠবে। কিন্তু গত এক মাসের ব্যবধানে বাজারে মোটা ও মাঝারিমানের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৫২-৫৪ টাকা ও মাঝারিমানের চাল পাইজাম/লতা ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া নাজিরশাইল ও মিনিকেট মানভেদে ৬৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের একজন খুচরা চাল ব্যবসায়ী বলেন, এখন তো চালের মৌসুম শেষের দিকে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে আগামী এক/দেড় মাসের মধ্যে নতুন ধান, চাল বাজারে উঠবে। তাই নতুন করে আর চালের দাম বাড়বে না। এদিকে চালের পাশাপাশি চিনির দামও বেড়েছে।
সম্প্রতি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪০-১৪৫ টাকা বিক্রি হয়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩৫-১৪০ টাকা। এ ছাড়া খুচরা বাজারে প্যাকেটজাত চিনি ১৪০-১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি। সরকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে তা কার্যকর হয়নি।
চড়া আলু ও পেঁয়াজের দাম
সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও আলু ও পেঁয়াজের দাম এখনও চড়া। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা দাম কমলেও এখনও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা। অথচ সরকার খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য প্রতি কেজি আলুর দর ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬২ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশে এসেছে ২ হাজার ৭০০ টন। যা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ফলে বাজারে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারছে না। এ ছাড়া পেঁয়াজ নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভোক্তাদের। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।