এলপি গ্যাসের সরকার নির্ধারিত দাম মানছে না উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। তারাই পরিবেশকদের কাছে ১০০ টাকা বেশি দামে সিলিন্ডার সরবরাহ করছে। পরিবেশক ভোক্তার কাছে নিচ্ছে আরও বেশি। সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ বিষয়টি উঠে আসে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এলপিজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উৎপাদনকারী পরিবেশক ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এ সময় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা জানান, বিইআরসি গত ২ ফেব্রুয়ারি ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজি গ্যাসের মূল্য ১ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো মিল থেকে ১২ কেজির এলপি গ্যাস পরিবেশকদের ১ হাজার ৪২৩ টাকায় সরবরাহ করবে। পরিবেশক প্রতিটি বোতলে ৩৭ টাকা মুনাফা নেবে। আর খুচরা বিক্রেতা পাবে ৩৮ টাকা। কিন্তু বাজারে এসব দরদামের কিছুই ঠিক নেই। একটি সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ১৭০০-১৮০০ টাকা। এ সময় পরিবেশকরা দাবি করেন, কোম্পানিগুলো ১২ কেজির একটি গ্যাস সিলিন্ডার ১ হাজার ৫২০ টাকায় বিক্রি করছে। পরিবেশকরা সেখানে আরও ৭০-১০০ টাকা লাভে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। খুচরা বিক্রেতারা দাম আরও বাড়িয়ে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ভোক্তার কাছে বিক্রি করছে। এ সময় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলে, বিইআরসি ২০২১ সালের অক্টোবরের পর থেকে গণশুনানির আয়োজন করছে না। সম্প্রতি ডিজেলের মূল্য গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লেও তা এলপি গ্যাসের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি। এ ছাড়া এলসি জটিলতায় গ্যাস আমদানিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সবকিছু মিলে তারা নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না। তবে কোনো কোনো কোম্পানির প্রতিনিধিরা দাবি করেন, পরিবেশকদের কাছে বাড়তি দামে বিক্রি করলেও পরবর্তীতে তাদের কমিশন হিসেবে টাকা ফেরত দিচ্ছেন। পরিবেশকেরা বলেন, তারা কোম্পানি থেকে বাড়তি দামে কিনছেন এ জন্য তারাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। গত কয়েক দিন ধরে কোম্পানির ডিপোতে গাড়ি পড়ে আছে প্রতিদিন দুই হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া ডেমারেস দিতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের মূল্য ২৬৬ টাকা বাড়ানোর পরও কেন নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ সিলিন্ডার গ্যাস এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো হয়েছে। এ খাতে শৃঙ্খলা দরকার। ইচ্ছে হলেই কেউ দাম বাড়িয়ে দেবে সেটা হতে পারে না। তিনি বলেন, যেসব সমস্যার কারণে দাম বাড়ছে, সেটার দাম নিয়ন্ত্রণে থাকা দরকার। প্রয়োজনে আমরা বিইআরসির সঙ্গে কথা বলব। আপনারা সহনীয় মুনাফা করুন। রমজানে যেন দাম সহনীয় থাকে সে আহ্বান করছি।